রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ও পাউবো’র সম্পত্তি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা।। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী


sohel Rana প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ২৭, ২০২৪, ৯:৪১ পূর্বাহ্ন /
রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ও পাউবো’র সম্পত্তি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা।। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ও পাউবো’র সম্পত্তি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা।। অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

 

মোঃআবু কাওছার মিঠু রূপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সম্পত্তি দখল করে অবৈধ বালুর ব্যবসা করেছেন প্রভাবশালীরা। নদীর তীর ও রূপসী-কাঞ্চন বাইপাস সড়ক ঘেঁষা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় বালুর স্তুপ করে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ওই এলাকাবাসী ও রূপসী-কাঞ্চন বাইপাস সড়কে চলাচলরত যানবাহন পথচারী। বালুর পানি সড়কে এসে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।

জানা গেছে, উপজেলার মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ঋষি পাড়া এলাকায় মুড়াপাড়া
মৌজার ৪,৫,৬,৭,৮ ও ৯ নং আরএস দাগের পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটি এর প্রায় ৩ বিঘা জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে বালুর ব্যবসা করে আসছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মুড়াপাড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার জব্বার মিয়া। এখান থেকে প্রতিদিব শতশত ট্রাক বালু বিক্রি করছেন এ প্রভাবশালী ব্যক্তি। রূপসী-কাঞ্চন বাইপাস সড়কের পাশে বালু বিক্রি করায় এখানে প্রতিনিয়তই যানজটের সৃষ্টি হয়। বালুর গদির পাশেই ৫ শতাধিক পরিবারে গণবসতি এলাকা। বাতাসের গতি একটু বাড়লেই এখানকার বালু উড়ে এসে ঘরের ভেতর পড়ে। এসকল ধুলা বালির কারনে ছোট বড় সকলেই ভোগছে ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট জনিত রোগে। শুধু তাই নয় বাতাসে এ বালু উড়ে পড়ে সড়কে চলাচলরত যানবাহন ও পথচারীদের চোখে মুখে। এতেও প্রতিনিয়তই এখানে ঘটছে দূর্ঘটনা। ভুক্তভোগীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিআইডব্লিউটিএ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলেও এর কোনো সুফল পাননি তারা।

এ সড়কে নিয়মিত চলাচলর কভারভ্যান চালক হান্নান মিয়া বলেন, পূর্বাচল থেকে এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন নারায়ণগঞ্জ আসা যাওয়া করি। এরকম একটি ব্যস্ততম সড়কের পাশে বালুর স্তুপ দিয়েছে বাতাস আসলেই বালু চোখে এসে পড়ে। তখন চোখে কিছু দেখতে পাইনা। এ বালুর কারণে চোখের অনেক ক্ষতি হয়।

ইজি বাইক চালক জামান বলেন, আমি হাটাবো থেকে মুড়াপাড়া বাজার পর্যন্ত প্রতিদিন অটো চালাই। আমরা মুড়াপাড়া বাজার থেকে যাত্রী নিয়ে হাটাবোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে ঋষিপাড়া এলাকায় পৌঁছালেই শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে জব্বার মেম্বারের বালু ও পাথরের গদি থেকে বাতাসের সাথে বালু উড়ে রাস্তা পুরো ঘুলা হয়ে যায় এবং আমাদের ও যাত্রীদের শরীরসহ পুরো গাড়ির গ্লাস বালু দিয়ে ভরে যায় এমনকি আমাদের চোখেও বালু যায় এতে করে আমাদের অটো ড্রাইভার, যাত্রী ও সাধারণ জনগণের চলাচল করতে অসুবিধা হয়।

ইজিবাইকের যাত্রী সিরাজ মিয়া বলেন, রাস্তার পাশে বালু ও পাথরের গদি থেকে ট্রাক ও পিকআপ দিয়ে বালু ও পাথর আনা নেওয়ার কারণে ঘুরা পাথর থেকে পাথরের বড় খোয়া সড়কের রাস্তার উপরেই পরতে থাকে। এ পাথরের কারণে আমরা দেখি অনেক সময় গাড়ি চালকরা গাড়ি জায়গামতো থামাতে পারেনা। এ কারণেই এ সড়কে একের পর এক দূর্ঘনা ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, জব্বার মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে শীতলক্ষ্যা নদী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা, মসজিদের জায়গা দখল করে বালুর ব্যবসা করতাছে। বাতাস আসলে তার এ বালু আমাদের উড়ে ঘরের ভেতর আসে। খাবারেও পড়ে। আমরা তার বালুর অত্যাচারে অতিষ্ঠ। আমরা এলাকাবাসী এ বিষয়ে মেম্বার চেয়ারম্যানকে জানাইছিলাম তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এ অবৈধ বালুর স্তুপ যেন এখান থেকে অপসারণ করা হয়।

এদিকে বানিয়াদী ঋষিপাড়া এলাকার এক গৃহবধূ জানায়, রান্না করার সময় বাতাসের সাথে বালুর গদি থেকে বালু উড়ে এসে আমাদের খাবারের উপর পরে খাবার নষ্ট হচ্ছে। বাতাস আসলেই ঘরে বালু ঢোকে পরে। এ বালুর কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। এগুলো দেখার কেউ নাই।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জব্বার মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি ব্যস্ততা দেখিয়ে ফোন রেখে দেন।

এ বিষয়ে মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ তোফায়েল আহমেদ আলমাছ বলেন, জব্বার মিয়ার বালুর অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে ঐ এলাকার অনেকেই আমার কাছে বিচার নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে জব্বার মিয়ার সঙ্গে কথা বলার জন্য তাকে ডাকলে সে আসে নাই।তার বালুর ব্যাপারে আমি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।

এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, বিআইডব্লিউটিএ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে বালুর স্তুপ করা হলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।